Sunday, 14 December, 2025
Logo
বিজ্ঞাপন
যাবতীয় রড, সিমেন্ট, ইট, বালি ও কনা পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করা হয় ।। যোগাযোগ- মেসার্স হোসেন ব্রাদার্স/ জাকের ট্রেডার্স।। সোবান মঞ্জিল, বসুর হাট রোড, সিনেমা হলের পাশে, দাগনভুইয়া, ফেনী। প্রোপ্রাইটর জাকের হোসেন আলমগীর ০১৭১১-৯৬২৯২৫।। ০১৮৭১-৯৩০০০৮ মেসার্স কে আহাম্মদ এন্ড সন্স! পরিবেশক,বি এম, ডেল্টা ও ইউনি এল পি গ্যাস! যোগাযোগ- বসুরহাট রোড, সিনেমা হলের সামনে, দাগনভুইয়া, ফেনী- ০১৭১১-৩০৪৮৭৩, ০১৮৩৯-৩৯৭১৩০! দাগনভুইয়া ফিজিওথেরাপী সেন্টার, একটি আধুনিক বাত, ব্যথা, প্যারালাইসিস ও মুখ বাঁকা চিকিৎসা কেন্দ্র। ঠিকানা- সোবহান মঞ্জিল, বসুর হাট রোড। (সাবেক ঝর্না সিনেমা হলের পাশে)। দাগনভুইয়া, ফেনী। 01818-019684, 01721-910110 সর্বাধুনিক মেশিনে রোগ নির্নন ও বিশেষজ্ঞ ডক্টর চেম্বার।। ফেনী ল্যাব সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।। এস এস কে রোড়, ফেনী।। 01711375108/ 01815507975

বসুরহাট পৌরসভায় ৩৩ বছর ধরে এক পদে "ঘুষ বাণিজ্যে ও সম্পদের পাহাড়"

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে


বসুর হাট পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ারের ছবি

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল নড়ে না, এমন অভিযোগ এখন জনমুখে মুখর।

জন্ম নিবন্ধন সনদ, প্রত্যয়ন পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, রিকশা লাইসেন্স, নতুন বাড়ির ফ্ল্যান, টেন্ডার, বাজেট, উন্নয়ন প্রকল্প কিংবা মৃত্যু সনদ—সব কিছুতেই টাকার লেনদেন ছাড়া কাজ হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে বসুরহাট পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম সরওয়ারের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ তেত্রিশ বছর ধরে একই পদে বহাল থেকে তিনি যেন গড়ে তুলেছেন এক দুর্নীতির সাম্রাজ্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালী এক সিন্ডিকেট তৈরি করে নিয়েছেন, যারা প্রতিটি ফাইল থেকে ঘুষের ভাগ বুঝে নেয় নিয়মিতভাবে।

সূত্রে জানা যায়, অফিসে ঢুকেই তিনি ঘুষের হিসাব-নিকাশ শুরু করেন। কে কত টাকা দেবে, কাকে কতটা সময় ঝুলিয়ে রাখা হবে—সব কিছু চলে এক অঘোষিত নিয়মে। অভিযোগ রয়েছে, ভুয়া প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে এই কর্মকর্তা প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত কয়েক বছরে তিনি গড়ে তুলেছেন বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ। নিজ বাড়িতে নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন, ছেলেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল উপহার দিয়েছেন, স্ত্রীর নামে কিনেছেন ১২ ভরি স্বর্ণ। এ ছাড়াও নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।

ভুক্তভোগীরা জানান, টাকার ঘাটতি থাকলেই ফাইলটি হঠাৎ হারিয়ে যায়, আবার নানা অজুহাতে কাজ আটকে দেওয়া হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে নানা উপায়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। এক সেবাগ্রহীতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “টাকা না দিলে ফাইল চিরদিনের মতো হারিয়ে যায়। কখনো বলে সই হয়নি, কখনো নানান অপ্রয়োজনীয় কাগজের কথা বলে গ্রাহকদের কাজ থেমে যায়। আসলে সবই টাকা নেওয়ার ক ৌশল।” প্রভাবশালী ও ভয়ভীতির কারণে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না। 

০৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু দাউদ জানান, বসুরহাট পৌরসভায় যেন দুর্নীতির এক অঘোষিত নিয়ম চালু আছে—যেখানে ঘুষই কাজের চাবিকাঠি।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা গোলাম সরওয়ারের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, “আমি কারো ফাইল আটকে রাখিনি। কৃষি ব্যাংক থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ির নির্মাণকাজ শুরু করেছি।” তবে গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

কিন্তু স্থানীয়দের বক্তব্য ভিন্ন। এক বাসিন্দা জানান, “ছেলের হাতখরচ ও স্ত্রীর প্রসাধনীর ব্যয় মাসে লাখ টাকা। অথচ অফিসের মাসিক বেতন দিয়ে এমন জীবনযাপন সম্ভব নয়।”

দীর্ঘদিনের এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীরব ক্ষোভ এখন দানা বাঁধছে। অসংখ্য সেবাগ্রহীতা অভিযোগ করছেন, তারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনো সমাধান পাননি। উল্টো ঘুষের হার আরও বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ নাগরিকরা পৌরসভার সেবার পরিবর্তে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। গত ১৫ বছরে নিজের ইচ্ছেমত ঘুষের রেট বসিয়েছেন। রাজনৈতিক পালাবদলের সাথে সাথে নিজের ছন্দের তাল পরিবর্তন করে নতুনদের ম্যানেজ করে নতুন উদ্যোমে চলছে আগের মত, পরিবর্তন হয়নি কিছুই। 

ভুক্তভোগীদের দাবি, গোলাম সরওয়ার ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত শুরু করে ব্যবস্থা না নিলে বসুরহাট পৌরসভা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হবে। 

প্রবাসী আবুল কালাম জানান, আমি নিজেও হয়রানির শিকার হয়েছি। নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এই দুর্নীতির চক্র ভেঙে না দিলে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি থামবে না।

ব্যবসায়ী ইমাম উদ্দিন জানান, “বসুরহাট পৌরসভা এখন যেন এক ঘুষের কারখানা, যেখানে টাকা ছাড়া নড়ে না কোন ফাইল।”

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্নীতির বিষয়ে ছাড় নেই।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত